অল্প পুঁজিতে ৮টি লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া

Yorumlar · 14 Görüntüler

আজকে আমি আপনাদের সাথে এমন কিছু ব্যবসার আইডিয়া শেয়ার করবো যেগুলোর মাধ্যমে আপনি অল্প পুজিতে অতি দ্রুত একটি ল??

১. হোমমেড ফুড 

আপনি যদি একজন মেয়ে হয়ে থাকেন তাহলে এই বিজনেস আইডিয়াটি আপনার জন্য গেম চ্যাঞ্জার হতে পারে। হোমমেড ফুডের অনলাইন বিজনেসের কথা জানি না এমন মানুষ হয়তো এখন পাওয়াই যাবে না। আপনার রান্নার হাত যদি ভালো হয়ে থাকে কিংবা আপনার যদি রানার প্রতি অগাধ ভালোবাসা থেকে থাকে তাহলে এই বিজনেস থেকে আপনি সর্বোচ্চ লাভবান হতে পারবেন। বর্তমান সময়ে হোমমেড খাবারের চাহিদা অনেক বেশি। এই বিজনেসের সবথেকে বড় সুবিধা হল এটি শুরু করার জন্য আপনার কোন হোটেল কিংবা রেস্টুরেন্ট দিতে হবে না।

শুধুমাত্র খাবার মেকিং এর খরচ ব্যতীত গুনতে হবে না কোন এক্সট্রা টাকা। শুরু করতে পারেন যেকোন ধরনের খাবার দিয়ে। তবে প্রসেসিং ফুডের মধ্যে কেক, কুকিজ, জ্যাম, স্ন্যাক্স আইটেম সহ বিভিন্ন রেগুলার খাবার যেমন ভাত, মাছ, মাংস, ডাল, সবজি তথা লাঞ্চের  চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে ফুডপান্ডা সহ বেশ কিছু অনলাইন ফুড শপের সাথে ডিলিং করে আপনি স্বচ্ছন্দে শুরু করতে পারেন এই বিজনেস। তাছাড়াও লোকাল হোটেল কিংবা কফি শপের সাথে ডিল করেও তাদের জন্য তৈরি করে দিতেন বিভিন্ন খাবার। এই বিজনেসের মাধ্যমে বর্তমানে কেউ কেউ ২০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত মাসে আয় করছে। 

২. হ্যান্ডমেড পণ্য 

হ্যান্ডমেড পণ্য বিক্রি এই সময়ের খুবই চাহিদাসম্পন্ন একটি বিজনেস। এখনকার মানুষ টাকা বেশি দিয়ে হলেও  এস্থেটিক এবং ইউনিক জিনিস কিনতে পছন্দ করে। আর মানুষের সেইসব শখের শীর্ষস্থানে রয়েছে হ্যান্ডমেড পণ্য। এই ব্যবসার সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এটি শুরু করার জন্য বড় কোনো বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় না, শুধু আপনার সৃজনশীলতা এবং একটু উদ্যোগ থাকলেই চলবে। হ্যান্ডমেড পণ্য নিয়ে কাজ করা যে শুধুমাত্র একটি বিজনেস তা নয়, বরং এর মাধ্যমে আপনি পারবেন আপনার নিজস্ব স্টাইল এবং ক্রিয়েটিভ ডিজাইন নিয়ে কাজ করার সুযোগ এবং এই বিজনেসে  প্রফিটের পরিমাণ ও তুলনামূলক অনেক বেশি। 

কিভাবে শুরু করবেন? হস্তশিল্প নিয়ে কাজ করাটা মূলত ডিপেন্ড করে আপনার কি তৈরি করতে ভালো লাগে এবং কি কাজে আপনি আপনার সৃজনশীলতাকে সর্বোচ্চ ব্যবহার করতে পারবেন তার উপর। তবে আপনাদের বোঝার সুবিদার্থে নিচে কিছু আইডিয়া শেয়ার করা হল। যেমন- 

  • জুয়েলারি (কানের দুল, হার, ব্রেসলেট)
  • হ্যান্ডমেড পোশাক( ক্রুশ কাটার, সুতার কাজের)
  • বিভিন্ন ধরনের কসমেটিকস
  • রেডিমেড প্রোডাক্ট

৩. রিসেলিং ব্যবসা 

রিসেলিং হল এমন একটি অনলাইন বিজনেস আইডিয়া যেখানে বিক্রেতা সরাসরি হোলসেলারের থেকে কম দামে পণ্য কিনে বেশি দামে বিক্রি করে থাকে। যে ব্যক্তি রিসেলিং ব্যবসা করে থাকে তাকে বলে রিসেলার। ধরুন আপনি একটি প্রোডাক্ট ২00 টাকায় কিনে তা ৪00 টাকায় বিক্রি করলেন, তাহলে এটি হল রিসেলিং ব্যবসা।

এই ব্যবসার সুবিধা হল যেহেতু অনলাইনে হয় এই বিজনেস করা হয় তাই শুরু করার জন্য বড় পরিসরে পুঁজির প্রয়োজন হয় না। আপনি ধীরে ধীরে আপনার ব্যবসা বাড়াতে পারবেন। এই বিজনেসে প্রাথমিকভাবে ইনভেস্টমেন্ট হিসেবে আপনার ১০,০০০ থেকে ৩০,০০০ টাকা খরচ হতে পারে। এবং মার্কেটিং এর জন্য প্রায় ২,০০০ থেকে ৫,০০০ টাকা খরচ হতে পারে। এই বিজনেস থেকে আপনি শুরুর দিকে থেকে ৫,০০০ থেকে ২০,০০০ টাকা আয় করতে পারবেন। তবে ধীরে ধীরে এর থেকে আপনি মাসিক ২০,০০০ থেকে ৫০,০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারবেন। 

৪. ড্রপশিপিং

ড্রপশিপিং(dropshipping) মূলত একটি অনলাইন ব্যবসার নাম। বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে যেহেতু ড্রপশিপিং একটি নতুন বিজনেস তাই চলুন শুরুতেই জেনে নেওয়া যাক ড্রপশিপিং আসলে কি? ড্রপশিপিং হল এমন একটি বিজনেস যেখানে বিক্রেতা, ক্রেতার কাছ থেকে অর্ডার নিয়ে সেই অর্ডার অনুযায়ী সাপ্লায়ারের কাছ থেকে পণ্য কিনে সরাসরি ক্রেতার কাছে পাঠায়। এই বিজনেসে যেহেতু কোন ইনভেস্টমেন্ট নেই তাই এখানে লসের কোন আশংকা ও নেই। বলা যায় এটি একটি সেফ বিজনেস। তবে এই বিজনেসে ভালো করার জন্য আপনাকে সিস্টেমেটিক ওয়েটে আগাতে হবে। নইলে এখানে সুবিধা করা খানিকটা চ্যালেঞ্জিং হয়ে যাবে। তবে চলুন জেনে নেওয়া যাক কি সেসব ট্রিক্স- 

  • একটি ফেসবুক পেইজ বা ই-কমার্স ওয়েবসাইট খুলতে হবে
  • কোন জিনিস নিয়ে কাজ করবেন তার স্পেসিফিক নিশ সিলেক্ট করা
  • মোস্ট ইম্পর্ট্যান্ট সাপ্লায়ার দের সাথে চুক্তি করা
  • মার্কেটিং করার দক্ষতা
  • কাস্টমার কমিউনিকেশনে পারফেক্টশন আনা

এই বিজিনেসের সবথেকে মজা হল আপনি এখানে শুধু প্রোডাক্টের মার্কেটিং এবং বিক্রির দায়িত্ব পালন করবেন, বাকিটা আপনার সাপ্লায়ার করবে। পণ্যের উৎপাদন কিংবা স্টোরেজ এসব কোন কিছু নিয়েই আপনাকে ভাবতে হবে না। অল্প 

৫. টিউশন/কোচিং সেন্টার

আপনি যদি স্টুডেন্ট হয়ে থাকেন আর আপনার কাছে যদি পুঁজি বলতে আপনার মস্তিষ্ক ব্যতীত কিছুই অবশিষ্ট না থাকে, তাহলে বিনা ইনভেস্টে আপনি টিউশনির বিজনেস শুরু করতে পারেন। হ্যাঁ, আপনি ঠিক ই শুনছেন টিউশনিকে এখন একটা বিজনেস হিসেবেই মনে করা হয়। এর জন্য আপনার কিছুই করতে হবে না শুধু আপনি যে সাবজেক্টে দক্ষ সে  সাবজেক্টকে বেস করেই আপনি শুরু করতে পারেন এই বিজনেস।তবে ধীরে ধীরে কিছু টাকা জমিয়ে আপনি নিজেই একটি কোচিং সেন্টার খুলে ফেলতে পারেন। অথবা বর্তমানে অনলাইনে পড়ানোর চাহিদা ও ব্যাপক।

আপনার নিজের যদি একটা স্মার্টফোন থাকে তাহলে এর মাধ্যমে অনলাইন বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে (যেমন Zoom, Google Meet) ক্লাস নেওয়ার মাধ্যমে খুব সহজেই একটা ভালো সংখ্যক স্টুডেন্টের মাধ্যমে শুরু করতে পারেন। অল্প পুঁজির ব্যবসা হিসেবে তখন এই বিজনেসকেই আপনি নিয়ে যেতে পারবেন একটা বড় অবস্থানে। 

৬. অনলাইন রিটেইল

অনলাইন রিটেইল আসলে কি? অনলাইন রিটেইল হল এমন একটি বিজনেস আইডিয়া যেখানে পণ্য বা সেবা ইন্টারনেটের মাধ্যমে বিক্রি করা হয়। যা ই-কমার্স বিজনেস নামেও পরিচিত। এই বিজনেসের সবথেকে বড় সুবিধা হল এখানে ক্রেতাকে কোন কিছু কেনার জন্য ফিজিক্যাল শপে যেতে হয় না। ক্রেতা চাইলে যেকোন সময়, যেকোন জায়গা থেকে কেনাকাটা করতে পারে। এই বিজনেস শুরুর জন্য ইনভেস্টমেন্ট বলতে আপনার প্রয়োজন হবে একটি ই-কমার্স ওয়েবসাইট।

ওয়েবসাইটটি বানাতে আপনার  খরচ হতে পারে প্রায় ১৫০০০ হাজার থেকে ৫০০০০ হাজার টাকা।  আসলে এই খরচ টা ডিপেন্ড করবে আপনি কেমন ওয়েবসাইট বানাতে চান তার উপর। তবে আশা করা যায় সব মিলিয়ে ২০০০০ থেকে ৩০০০০ হাজার খরচ করলে আপনি বেশ ভালো মানের একটা ওয়েবসাইট বানিয়ে নিতে পারবেন। মাঝারি ইনভেস্টেমেন্ট করলে এই বিজনেস থেকে প্রতি মাসে আপনি ২০% বা তার থেকেও বেশি লাভ করতে পারবেন। এই লাভের হার ও নির্ভর করবে আসলে বিজনেসে আপনার ইনভেস্টের উপর।

৭. হোম ডেকোর বিজনেস

মানুষের মনের নান্দনিকতা নাকি ঘরের মধ্যে ফুটে উঠে। তাই মানুষ এখন মনের সব রং-শিল্প দিয়ে নিজের ঘরকে সাজাতে পছন্দ করে। বিভিন্ন ধরনের ওয়াল পেইন্টিং, ওয়াল মিরর, কুশন কভার,  সহ ঘর সাজানোর জন্য এখন রয়েছে হাজার অপশন। বিজনেস শুরু আগে আইডিয়া পাওয়ার জন্য আপনি বিভিন্ন হোম ডেকোর এর দোকান গুলো ঘুরে ঘুরে দেখতে পারেন। এতে আপনি মানুষের চাহিদা এবং প্রোডাক্টের প্রাইজ সম্পর্কে ভালো একটা ধারনা হয়ে যাবে।  ঢাকার মধ্যে এমন কিছু মার্কেট হল- নিউমার্কেট, শাহাবাগ, শাপলা চত্বর ইত্যাদি এমন অনেক রয়েছে ইউটিউবে সার্চ করলেই পেয়ে যাবেন আশা করি।  অল্প পুঁজির ব্যবসা হিসেবে এই বিজনেস আইডিয়াটি বর্তমান সময়ে খুব ই জনপ্রিয়।  

 টাকা।

৮. ইউটিউবিং

অল্প পুঁজিতে লাভজনক ব্যবসার আইডিয়া হিসেবে ইউটিউবিং বর্তমানে অত্যন্ত সম্ভাবনাময় একটি বিজনেস। হ্যাঁ, ইউটিউবকে মানুষ এখন বিজনেস হিসেবেই মনে করছে।  শুধুমাত্র একটি মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই শুরু করা যায় ইউটিউব বিজনেস। কিন্তু কিভাবে আয় করবেন ইউটিউব থেকে?  ইউটিউবে কনটেন্ট তৈরি করে এড, স্পন্সরশিপ, এবং অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমে ইনকাম করা যায়। গুগল অ্যাডসেন্সের বিজ্ঞাপনী আয়ের পাশাপাশি ট্রেন্ডি ভিডিও এবং সঠিক SEO ব্যবহার করলে দ্রুত সফল হওয়া সম্ভব এই বিজনেসে। ইউটিউব চ্যানেল খুলতে বা ভিডিও আপলোড করতে কোনও বড় অংকের বিনিয়োগের প্রয়োজন হয় না। একটি ভালো মানের মোবাইল ফোন এবং ইন্টারনেট সংযোগ থাকলেই শুরু করা যায়। নিয়মিত মানসম্মত ভিডিও আপলোড ও দর্শকদের সাথে সংযোগ বজায় রাখলে ইউটিউবিং অল্প বিনিয়োগে একটি লাভজনক ব্যবসা হয়ে উঠতে পারে। 

সাধারণত গুগল অ্যাডসেন্স থেকে প্রতি হাজার ভিউতে $0.10 থেকে $10 পর্যন্ত আয় হতে পারে, যা ভিউয়ের উপর নির্ভর করে। এছাড়াও, স্পন্সরশিপ, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিং এবং পণ্যের প্রমোশন থেকেও ভালো ইনকাম করা যায়। শুরুতে আয় কম হতে পারে, তবে চ্যানেল বড় হলে মাসিক আয় $500 থেকে $5,000 বা তার বেশি হতে পারে।

সর্বোপরি,

অল্প পুঁজিতে ব্যবসা শুরু করতে হলে সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন  ধৈর্য এবং লেগে থাকার মনোভাব। উপরের অনলাইন ও অফলাইন বিজনেসের আইডিয়াগুলি  খুব ই কম বিনিয়োগে শুরু করা যায় এবং এই বিজনেসগুলো  সঠিকভাবে পরিচালনা করতে পারলে অনেক লাভজনক বিজনেস হতে পারে। কঠোর পরিশ্রম, নিয়মিত মনিটরিং এবং বাজার বিশ্লেষণ করলে আপনি আপনার ব্যবসাকে  দ্রুত একটা ভাল অবস্থানে নিয়ে যেতে পারবেন।

Yorumlar