সত্যি বলতে কী, আমি অনেক বই পড়ি, কিন্তু খুব কম বই আছে যেগুলো আমাকে থামিয়ে দেয় — একদম চুপচাপ বসে ভাবায়। “দ্য মিডনাইট লাইব্রেরি” ঠিক তেমন একটা বই। পড়া শুরু করার সময় ভাবছিলাম, “ভালোই তো হবে, একটা কাল্পনিক কাহিনি।” কিন্তু পড়তে পড়তে মনে হলো, এটা তো শুধু গল্প না — এটা যেন আমার নিজের জীবনের প্রতিচ্ছবি।
? বইটার মূল কথা কী?
মূল চরিত্র নোরা সিড, যার জীবন একেবারেই এলোমেলো হয়ে গেছে। চারপাশে হতাশা, নিজেকে ব্যর্থ মনে হয়। এক পর্যায়ে সে নিজের জীবন শেষ করার সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু মৃত্যুর পর সে চলে যায় একটা অদ্ভুত লাইব্রেরিতে — দ্য মিডনাইট লাইব্রেরি।
সেই লাইব্রেরির প্রতিটা বই একটা করে “ভিন্ন জীবন” দেখায়। মানে, যদি নোরা কোনো সিদ্ধান্ত অন্যভাবে নিতো, তবে তার জীবন কেমন হতো। একটা জীবনে সে রকস্টার, আরেকটায় অলিম্পিক সাঁতারু, আরেকটায় বিয়ে করেছে তার পুরোনো প্রেমিককে — প্রতিটা জীবন একেকটা বিকল্প গল্প।
? পড়তে পড়তে কী মনে হলো?
শুধু নোরা না, আমাদের প্রত্যেকের জীবনেই এমন কিছু “যদি” থাকে:
যদি ওই চাকরিটা না ছাড়তাম?
যদি ওকে শেষবারটা ফোন দিতাম?
যদি সাহস করে ওই সিদ্ধান্তটা নিতাম?
এই বইটা পড়তে পড়তে বারবার নিজের জীবনটাই মনে পড়ছিলো। লেখকের ভাষা খুব সহজ, কিন্তু কথাগুলো বুকের ভেতর গিয়ে লেগে থাকে।
? এই বইটার গুরুত্ব ঠিক কোথায়?
“দ্য মিডনাইট লাইব্রেরি” আমাদের মনে করিয়ে দেয় — নিখুঁত জীবন বলে কিছু নেই।
সব জীবনেই কষ্ট আছে, আনন্দ আছে, অনুশোচনা আর ভালোবাসাও আছে। প্রশ্ন হচ্ছে, আমরা কি আমাদের বর্তমান জীবনটাকেই গ্রহণ করতে শিখেছি?
বইটা আমাদের শিখিয়ে দেয়,
“সব জীবনেই অন্ধকার থাকে, কিন্তু তার মানে এই না যে আলো আসবে না।”
? আমার উপসংহার
এই বইটা চিৎকার করে কিছু বলে না। বরং শান্তভাবে আমাদের ভাবতে শেখায়। কেউ যদি মানসিকভাবে কঠিন সময় পার করছে, অথবা নিজের জীবন নিয়ে হতাশ, এই বইটা একটা আশার আলো দেখাতে পারে।
? আমার রেটিং: ৯/১০
একটা শান্ত অথচ শক্তিশালী গল্প, যা মনে করিয়ে দেয় — imperfections নিয়েই জীবন সুন্দর।
তুমি কি কখনও ভেবেছো — “যদি তখন ওই সিদ্ধান্তটা না নিতাম?”
কমেন্টে লিখে জানাও। আমি তোমার গল্প শুনতে আগ্রহী।
— সুজন রানা